বিয়ের আগে সেরা ৫টি করণীয় ও বর্জনীয় উপদেশ
বিয়ের আগে সেরা ৫টি করণীয় ও বর্জনীয় উপদেশ
বিয়ে একটি নতুন জীবনের সূচনা। দুটি মানুষের ভালোবাসার বন্ধন শুধু নয়, দুটি পরিবারেরও মেলবন্ধন ঘটে এই শুভ পরিণয়ে। তাই বিয়ের আগে কিছু বিষয় জেনে রাখা এবং কিছু বিষয় এড়িয়ে চলা বুদ্ধিমানের কাজ। একটি সুন্দর ও সুখময় ভবিষ্যৎ দাম্পত্য জীবনের জন্য নিচে ৫টি গুরুত্বপূর্ণ করণীয় ও বর্জনীয় উপদেশ দেওয়া হলো:
করণীয়:
১. খোলামেলা আলোচনা: বিয়ের আগে আপনার হবু জীবনসঙ্গীর সাথে ভবিষ্যৎ জীবন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করুন। আপনাদের দুজনের পছন্দ-অপছন্দ, আশা-আকাঙ্ক্ষা, আর্থিক পরিকল্পনা, সন্তানধারণের ভাবনা এবং পারিবারিক প্রত্যাশাগুলো স্পষ্টভাবে একে অপরের সাথে ভাগ করে নিন। কোনো রকম লুকোচুরি বা অস্পষ্টতা রাখবেন না। এই আলোচনা আপনাদের বোঝাপড়াকে আরও দৃঢ় করবে।
২. একে অপরের পরিবারকে জানা: শুধু দুজন মানুষ নয়, বিয়ের মাধ্যমে দুটি পরিবারও পরস্পরের সাথে যুক্ত হয়। তাই বিয়ের আগে আপনার সঙ্গীর পরিবারের সদস্যদের সাথে পরিচিত হোন এবং তাদের রীতিনীতি ও মূল্যবোধ সম্পর্কে জানার চেষ্টা করুন। একইভাবে আপনার সঙ্গীকেও আপনার পরিবারের সাথে মেশার সুযোগ দিন। পারস্পরিক বোঝাপড়া ও সম্মান বজায় থাকলে ভবিষ্যতে সম্পর্ক ভালো থাকবে।
৩. আর্থিক পরিকল্পনা: বিয়ের পর সংসারের খরচ, সঞ্চয় এবং ভবিষ্যৎ আর্থিক নিরাপত্তা নিয়ে সঙ্গীর সাথে আলোচনা করে একটি সুস্পষ্ট পরিকল্পনা তৈরি করুন। দুজনের উপার্জনের উৎস, ব্যয়ের খাত এবং যৌথভাবে কিভাবে আর্থিক বিষয়গুলো সামলাবেন তা আগে থেকেই ঠিক করে নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ। এতে ভবিষ্যতে আর্থিক বিষয়ে ভুল বোঝাবুঝির সম্ভাবনা কমে যায়।
৪. মানসিক ও আবেগিক প্রস্তুতি: বিয়ে শুধু একটি সামাজিক প্রথা নয়, এটি একটি গভীর আবেগিক সম্পর্ক। বিয়ের আগে নিজের মানসিক স্বাস্থ্য এবং আবেগিক দিকগুলোর প্রতি খেয়াল রাখুন। নতুন জীবনে প্রবেশের জন্য ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করুন এবং যেকোনো পরিবর্তনের জন্য প্রস্তুত থাকুন। প্রয়োজনে বন্ধু, পরিবার বা মনোবিদের সাথে কথা বলুন।
৫. আইনি ও অন্যান্য দিক: বিয়ের আগে প্রয়োজনীয় আইনি প্রক্রিয়া এবং কাগজপত্র সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিন। বিয়ের রেজিস্ট্রেশন এবং অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করার গুরুত্ব উপলব্ধি করুন। এছাড়া, বিয়ের অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা এবং বাজেট নিয়েও সঙ্গীর সাথে আলোচনা করে নিন।
বর্জনীয়:
১. অবাস্তব প্রত্যাশা: সিনেমা বা কল্পকাহিনীর মতো নিখুঁত দাম্পত্য জীবনের প্রত্যাশা করা উচিত নয়। প্রতিটি সম্পর্কেই কিছু সমস্যা ও চ্যালেঞ্জ থাকে। বাস্তববাদী হোন এবং সঙ্গীর ছোটখাটো ভুলগুলো মেনে নেওয়ার মানসিকতা রাখুন।
২. একে অপরের প্রতি সন্দেহ: বিয়ের আগেই যদি একে অপরের প্রতি সন্দেহ বা অবিশ্বাস জন্মায়, তবে সেই সম্পর্ক ভবিষ্যতে টেকে রাখা কঠিন হতে পারে। সঙ্গীর প্রতি বিশ্বাস রাখুন এবং যেকোনো সমস্যা আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করুন।
৩. অন্যের সাথে তুলনা: নিজের হবু সঙ্গী বা দাম্পত্য জীবনকে অন্য কারো সাথে তুলনা করা উচিত নয়। প্রত্যেকের জীবন এবং সম্পর্ক আলাদা। অন্যের দেখাদেখি কিছু করার চেষ্টা না করে নিজেদের মতো করে একটি সুন্দর সম্পর্ক গড়ে তুলুন।
৪. যোগাযোগের অভাব: বিয়ের আগে এবং পরে উভয়ের মধ্যে নিয়মিত ও সুস্থ যোগাযোগের অভাব দেখা দিলে দূরত্ব সৃষ্টি হতে পারে। নিজেদের মধ্যে কথা বলুন, একে অপরের ভাবনা ও অনুভূতিকে গুরুত্ব দিন এবং সময় দিন।
৫. নিজেকে পরিবর্তন করার চেষ্টা: বিয়ের আগে বা পরে সঙ্গীকে নিজের মতো করে পরিবর্তন করার চেষ্টা করা উচিত নয়। প্রত্যেক মানুষের নিজস্ব ব্যক্তিত্ব ও বৈশিষ্ট্য রয়েছে। একে অপরের স্বতন্ত্রতাকে সম্মান করুন এবং যেমন আছেন তেমনভাবেই গ্রহণ করার মানসিকতা রাখুন।
পরিশেষে বলা যায়, বিয়ে একটি সুন্দর যাত্রা। সঠিক প্রস্তুতি এবং ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে গেলে এই পথ নিঃসন্দেহে সুখ ও সমৃদ্ধিতে ভরে উঠবে। উপরোক্ত উপদেশগুলো মেনে চললে একটি সুখী ও সফল দাম্পত্য জীবন শুরু করা সম্ভব।
