পরকীয়া

পরকীয়া

পরকীয়া, আক্ষরিক অর্থে অন্যের স্ত্রী বা স্বামীর সাথে অবৈধ সম্পর্ক। এটি শুধু একটি শব্দ নয়, বরং একটি জটিল সামাজিক, মনস্তাত্ত্বিক এবং নৈতিক সমস্যা। বিবাহিত জীবনে বিশ্বাস, সততা এবং ভালোবাসার স্তম্ভে আঘাত হানে এই পরকীয়া। এর ফলস্বরূপ ভেঙে যেতে পারে একটি সাজানো সংসার, তছনছ হতে পারে বহু মানুষের জীবন।

পরকীয়া কেন হয়, এর কারণ অনুসন্ধান করা বেশ কঠিন। মনোবিজ্ঞানীরা এর পেছনে বিভিন্ন কারণ উল্লেখ করেন। অনেক সময় দাম্পত্য জীবনে দীর্ঘদিনের অসন্তোষ, একঘেয়েমি, শারীরিক বা মানসিক দূরত্ব পরকীয়াকে উস্কে দিতে পারে। আবার কিছু ক্ষেত্রে নতুনত্বের আকর্ষণ, রোমাঞ্চের চাহিদা অথবা আকস্মিক দুর্বল মুহূর্তের সুযোগও এর জন্ম দিতে পারে। ব্যক্তিত্বের অভাব, সম্পর্কে নিরাপত্তাহীনতা অথবা প্রতিশোধের স্পৃহাও অনেক সময় মানুষকে পরকীয়ায় লিপ্ত হতে প্ররোচিত করে।

পরকীয়া শুধু দুজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ব্যক্তিগত সম্পর্ক নয়। এর গভীর প্রভাব পড়ে তাদের পরিবার, সন্তান এবং সমাজের উপর। একটি পরকীয়া সম্পর্ক আবিষ্কারের পর স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিশ্বাসের ফাটল ধরে, যা সহজে পূরণ হওয়ার নয়। সন্তানেরা মানসিক trauma-র শিকার হতে পারে, তাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। পারিবারিক ও সামাজিক সম্পর্কে নেমে আসে তিক্ততা ও অবিশ্বাস।

নৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে পরকীয়া একটি গুরুতর অন্যায়। বিবাহ একটি সামাজিক চুক্তি, যেখানে দুজন মানুষ একে অপরের প্রতি বিশ্বস্ত থাকার অঙ্গীকার করে। পরকীয়া সেই অঙ্গীকার ভঙ্গ করে এবং সঙ্গীর সাথে চরম বিশ্বাসঘাতকতা করে। এটি শুধু ব্যক্তিগত বিশ্বাসভঙ্গ নয়, বরং সমাজের মূল্যবোধের প্রতিও অশ্রদ্ধা প্রদর্শন।

পরকীয়া থেকে বেরিয়ে আসা বা এটিকে প্রতিরোধ করা সম্ভব। প্রথমত, দাম্পত্য জীবনে নিয়মিত ও খোলামেলা আলোচনা জরুরি। নিজেদের আবেগ, অনুভূতি এবং অভাবগুলো সঙ্গীর সাথে ভাগ করে নিলে অনেক সমস্যার সমাধান আগেই করা যায়। একে অপরের প্রতি মনোযোগ দেওয়া, সময় বের করে একসাথে কাটানো এবং ভালোবাসার প্রকাশ সম্পর্কের বাঁধনকে মজবুত করে।

দ্বিতীয়ত, ব্যক্তিগত সততা ও আত্মনিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ক্ষণিকের দুর্বলতা বা আকর্ষণে ভেসে না গিয়ে নিজের মূল্যবোধের প্রতি অবিচল থাকা উচিত। কোনো প্রকার অবৈধ সম্পর্কে জড়ানো থেকে নিজেকে সংযত রাখা প্রয়োজন।

তৃতীয়ত, সম্পর্কের সমস্যা সমাধানে পেশাদারদের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। অনেক সময় কাউন্সিলিং বা থেরাপির মাধ্যমে দাম্পত্য কলহ মিটিয়ে ফেলা সম্ভব এবং পরকীয়ার ঝুঁকি কমানো যায়।

পরকীয়া একটি ধ্বংসাত্মক প্রবণতা, যা ব্যক্তি, পরিবার এবং সমাজ—সবার জন্যই ক্ষতিকর। বিশ্বাস, ভালোবাসা ও পারস্পরিক সম্মানের ভিত্তিতে একটি সুস্থ ও স্থিতিশীল দাম্পত্য জীবন গড়ে তোলাই এর একমাত্র প্রতিরোধ। আমাদের সকলের উচিত এই বিষয়ে সচেতন থাকা এবং একটি বিশ্বস্ত ও ভালোবাসাপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করা।

Syed Mozammel Hossain Sunny

[ Matching guru ] it's a brand marriage organization পাত্র-পাত্রীর জুটি-বন্ধনে নির্ভরযোগ্য বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠান

View All Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *